একাদশ জাতীয় নির্বাচনের কিছুদিন আগ থেকে নানা অসুখে ভুগতে শুরু করেন এইচএম এরশাদ। ক্রমশই খারাপ হয়ে পড়ে শারীরিক অবস্থা। নির্বাচনের মাঠেও সেভাবে থাকতে পারেননি অসুখের কারণে। ছিলেন অনেকটাই নিস্তব্ধ। ছিলেন অনেকটাই একাকি।
বাসভবন প্রেসিডেন্ট পার্ক আর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালই হয়ে ওঠে তার রুটিন ওয়ার্ক। শারীরিক দুর্বলতার কারণে নেতা কর্মীদেরও তেমন একটা সাক্ষাৎ দিতেন না।
নির্বাচনের আগে রক্তে হিমোগ্লোবিন সমস্যা নিয়ে দুইবার সিঙ্গাপুর যান। নির্বাচনে এরশাদ নিজে দুটি আসনে নমিনেশন দাখিল করেন। তবে একবারের জন্য নির্বাচনী প্রচারণায় যেতে পারেননি। সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষ করে ফিরেন নির্বাচনের ঠিক দুইদিন পূর্বে । নিজের ভোটটিও দেয়া হয়নি এবার তার।
দু’টি আসনের মধ্যে রংপুর-৪ এ জয়লাভ করলেও ঢাকা-১৭ আসনে হেরে যান। নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি মহাজোট থেকে ২২টি আসনে জয়লাভ করে সংসদে যায়। তবে জোটে থেকেও তাদের দল ছিলো বিরোধী দলের ভূমিকায়। এরশাদ হন প্রধান বিরোধী দলের নেতা। তবে এই দায়িত্ব পালনে সংসদে যাওয়ার সুযোগ হয়নি খুব একটা।
নির্বাচনের পরও একবার সিঙ্গাপুর গিয়েছেন চিকিৎসার জন্য। শেষ বয়সটা মূলত একাকিত্বেই কেটেছে সাবেক এই রাষ্ট্রপতির। প্রেসিডেন্ট পার্কে ছোট ছেলে এরিক এরশাদকে নিয়ে বসবাস করতেন। আর কোনো নিকটাত্মীয় কাছে থাকতেন না তার। শীর্ষস্থানীয় দলীয় নেতারা মাঝে মধ্যে যেতেন তার সাথে দেখা করতে। কিছুক্ষণ অবস্থান করে তারা চলে আসতেন।
গত ২৬ জুন এরশাদ হঠাৎ করে জ্বর ও ফুসফুসে ইনফেকশনে আক্রান্ত হন। এসময় এরশাদের আপনজন বলতে কাছে কেউ ছিল না। কাজের লোকেরা খবর দিলে দ্রুত এরশাদকে সিএমএইচে নেয়া হয়। সেখানেই দুই সপ্তাহের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে না ফেরার দেশ পাড়ি দেন সেনাপ্রধান থেকে রাষ্ট্রপ্রধান হওয়া এই সাবেক জেনারেল।
Leave a Reply